মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নে দরদরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃষ্টিতে ভিজে পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এতে করে জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ৩শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। ২০১৩ সালে বিদ্যালয় ভবন ব্যবহার অনুপযোগী ঘোষনা করলেও আজও শুরু হয়নি সংস্কার বা পূর্ণনির্মান কাজ। শ্রেণী কক্ষের স্বল্পতার, দীর্ঘদিনেও ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল সংষ্কার না হওয়ায় রোদ-বৃষ্টির মাঝে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপকালে তারা বলে, বিদ্যালয়ে শ্রেণী কক্ষে বসে ক্লাস করতে আমাদের ভয় লাগে। অত্র বিদ্যালয়ে ২টি ভবনের মধ্যে ৪টি শ্রেণী কক্ষ রয়েছে। ২টি ভাল ২টি নষ্ট। এছাড়া ক্লাসে বেঞ্চ টেবিল পরিমাণ মত নেই। অনেক ছাত্র-ছাত্রী দাড়িঁয়ে ক্লাস করে।
দরদরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদা বেগম জানান, ১৯৬৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯২সালে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি নির্মিত হয়। যেটি বর্তমানে সম্পূর্ণ ব্যবহারে অনুপযোগী। ২০১৩ সালে এলজিইডি থেকে ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। পিডিবি-২ ভবনটিতে মাত্র ২টি কক্ষ রয়েছে। আর কোন রুম না থাকায় বাধ্য হয়ে পরিত্যাক্ত ভবনে জীবন ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। ঝড়-বৃষ্টি হলে স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২২৪জন। এরমধ্যে ছাত্র ১২১, ছাত্রী ১০৩জন। ২০১৫ সালের সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করে।
অভিভাবকমহল জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ এসব বিদ্যালয়ের বিষয়টি বারবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও কোন সমাধান পাননি তারা। তাদের দাবি অনতিবিলম্বে স্কুল ভবন গুলো সংস্কার করে বিদ্যালয় গুলোকে স্বাভাবিক পাঠদানে পরিবেশ নিশ্চিত করা হউক।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সীতারঞ্জন বড়–য়া বলেন, দরিদ্র এলাকার শিশুদের নিরাপত্তা ও লেখাপড়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত নতুন ভবণ নির্মান করার আহবান জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। বাংলাদেশ সরকার যখন শিক্ষা ক্ষেত্রে অতি মনোযোগী সেই সময় লামা উপজেলাধীন রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দরদরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা জীবনের ঝুুঁকি নিয়ে লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের ভবনের বিভিন্ন জায়গাতে বিশাল বিশাল ফাটল থাকার কারণে অবিভাবকবৃন্দ তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে আগ্রহ হারাচ্ছে।
রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মারমার কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, পর্যাপ্ত পরিমান নিরাপদ কক্ষ না থাকায় নিরুপায় হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা সর্ম্পকে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি মনে করেন কচিকাঁচা বালক-বালিকাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ঝুুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন ভবণ নির্মাণ করা খুব জরুরী।
লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা না করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে গাছের নিচে বা স্থানীয় অনুদান সংগ্রহ করে টিনসেট স্কুল নির্মাণ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নতুন ভবন তৈরি করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত: